প্রাচীন ভারতে চিকিৎসাশাস্ত্রে জীবক ছিলেন এক কিংবদন্তী বিজ্ঞানী। তাঁর জ্ঞান ছিল অগাধ এবং তাঁর অবদান আজও স্মরণীয়।

জীবকের জীবন ও শিক্ষা
মগধের রাজা বিম্বিসার একদিন রাতে প্রজাদের অবস্থা জানতে বের হয়েছিলেন এবং রাস্তায় একটি নবজাতকের কান্না শুনতে পান। তিনি শিশুটিকে উদ্ধার করে নিজের পুত্র হিসেবে লালন-পালন করেন এবং তক্ষশীলা শিক্ষানিকেতনে পাঠান। সেখানে জীব-ক গুরু আত্রেয়ের কাছে সাত বছর ধরে চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন এবং অসাধারণ জ্ঞান লাভ করেন।
জীবকের কর্মজীবন
শিক্ষা সমাপ্ত করে মগধে ফিরে আসেন এবং রাজা বিম্বিসারের রাজসভায় প্রধান চিকিৎসক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি শুধু একজন চিকিৎসক ছিলেন না, ভগবান বুদ্ধের একনিষ্ঠ সেবকও ছিলেন। বুদ্ধদেব তাঁকে সর্বকালের সর্বজনপ্রিয় শ্রেষ্ঠ উপাসক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
জীবকের খ্যাতি ছিল সুদূরপ্রসারী। কথিত আছে, তিনি রোগীদের স্পর্শ করেই রোগ নির্ণয় করতে পারতেন। এমনকি দূর থেকে আগত মানুষদের চোখের দেখেই তাদের রোগ সম্পর্কে ধারণা দিতে পারতেন।
জীবকের অলৌকিক ক্ষমতা
বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী, একবার বুদ্ধদেব অস্ত্রেরোগে আক্রান্ত হলে জীবক তাঁকে একটি প্রস্ফুটিত শ্বেতপদ্ম উপহার দেন। বুদ্ধদেব সেটির ঘ্রাণ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রোগ থেকে মুক্তি লাভ করেন।
জীবকের নৈতিক দৃঢ়তা
রাজা বিম্বিসারের পুত্র অজাতশত্রু ছিলেন বৌদ্ধধর্মের বিরোধী। তিনি পিতাকে হত্যা করে সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং বৌদ্ধধর্মের চিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা করেন। জীবক এই ঘটনায় মর্মাহত হন এবং অজাতশত্রুকে জানান যে তিনি বুদ্ধের দাসানুদাস। অজাতশত্রু তাঁকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে নিজের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করেন।
জীবক সর্বদা বুদ্ধদেবের আদর্শকে অনুসরণ করতেন এবং তাঁর প্রতি অনুগত ছিলেন। তিনি অজাতশত্রুকে ক্ষমা করলেও, কোশলরাজ প্রসেনজিৎ অজাতশত্রুকে ক্ষমা করতে পারেননি এবং তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।
জীবকের প্রজ্ঞা ও ক্ষমা
জীবক তাঁর সর্বশক্তি দিয়েও যখন সম্রাট অজাতশত্রুকে পরিবর্তন করতে পারলেন না, তখন তিনি সম্রাটের কাছে দণ্ড ভিক্ষা চাইলেন। তিনি বৌদ্ধধর্মের শেষ চিহ্নটুকু নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য চরম দণ্ড দাবি করেন।
অজাতশত্রু জীবকের প্রজ্ঞা ও ত্যাগের গভীরতা উপলব্ধি করতে পারেন। জীবক তাঁকে জানান যে বৌদ্ধধর্মের প্রচারের জন্য বাধার প্রয়োজন, এবং অজাতশত্রুই সেই বাধা সৃষ্টি করে ধর্ম প্রচারে সাহায্য করেছেন।
অজাতশত্রু নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং জীবকের পরামর্শ অনুযায়ী বৌদ্ধধর্মের অনুসারী হন। জীবক জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত বৌদ্ধ সংঘে অতিবাহিত করেন।
জীবকের অবদান
জীবক ছিলেন পৃথিবীর অন্যতম মানবদরদী চিকিৎসক। কঠিন পরিস্থিতিতেও তিনি নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবিচল ছিলেন। জীবকের লেখা পুঁথিপত্রের সংখ্যা বেশি না হলেও, তাঁর রচিত ‘বৃদ্ধ জীবকতন্ত্র’ নামক শিশুচিকিৎসার গ্রন্থটি আজও মূল্যবান সম্পদ।
READ MORE
সত্যেন্দ্রনাথ বসু |Satyendra Nath Bose Biography in Bengali
READ MORE
FAQ
Q.1: জীবক কে ছিলেন?
Ans: জীবক ছিলেন প্রাচীন ভারতের একজন কিংবদন্তী বিজ্ঞানী এবং চিকিৎসক।
Q.2: জীবকের পালক পিতা কে ছিলেন?
Ans: মগধের রাজা বিম্বিসার।
Q.3: জীবক কোথায় চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন করেছিলেন?
Ans: তক্ষশীলা শিক্ষানিকেতনে গুরু আত্রেয়ের কাছে।
Q.4: জীবকের বিখ্যাত গ্রন্থটির নাম কী?
Ans: ‘বৃদ্ধ জীবকতন্ত্র’। এটি শিশুচিকিৎসার একটি মূল্যবান গ্রন্থ।
Q.5: জীবক কার শিষ্য ছিলেন?
Ans: ভগবান বুদ্ধের।
Q.6: জীবকের বিশেষ ক্ষমতা সম্পর্কে কী জানা যায়?
Ans: কথিত আছে, তিনি রোগীদের স্পর্শ করেই রোগ নির্ণয় করতে পারতেন এবং দূর থেকে আগত মানুষদের চোখের দেখেই তাদের রোগ সম্পর্কে ধারণা দিতে পারতেন।
Q.7: জীবকের জীবনের মূল আদর্শ কী ছিল?
Ans: ভগবান বুদ্ধের আদর্শ অনুসরণ এবং তাঁর প্রতি অনুগত থাকা
- 5.1 ভারত: অবস্থান ও প্রশাসনিক বিভাগ | Class 10 Geography Short Question and Answer 20255.1 ভারত: অবস্থান ও প্রশাসনিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal Class 10th Madhyamik Geography Examination – পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট তোমরা যারা মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য 5.1 ভারত: অবস্থান ও প্রশাসনিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) MCQ প্রশ্ন ও …
- চক্রপাণি দত্ত: কিংবদন্তী চিকিৎসক ও পণ্ডিতচক্রপাণি দত্ত ছিলেন বিখ্যাত একজন আদর্শ চিকিৎসক এবং শারীরতত্ত্ববিদ। বহু দূর থেকে রোগীরা তাঁর কাছে চিকিৎসার জন্য আসতেন। তিনি রোগীদের চিকিৎসা করতেন আনন্দ সহকারে এবং অবসর সময়ে বই লিখতেন। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে ‘চিকিৎসা সংগ্রহ‘, ‘দ্রব্য গুণ‘ এবং ‘সর্বসার সংগ্রহ‘ উল্লেখযোগ্য। ‘চক্রদত্ত‘ নামক গ্রন্থে তিনি চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় লিপিবদ্ধ করেছেন। টীকাকার ও উপাধি চক্রপাণি দত্ত …
- পশ্চিমবঙ্গ সরকারের EWS সার্টিফিকেট পাওয়ার পদ্ধতি | EWS Certificate West Bengal Criteria | EWS সার্টিফিকেট কি এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?EWS সম্পূর্ণ কথাটি হল ইকনোমিক্যালি উই কার সেকশন (Economically Weaker Section) বা সমাজের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণি। EWS সার্টিফিকেটের মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া অংশকে নির্দিষ্ট কিছু সরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়া।এই সার্টিফিকেট এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি চাকরিতে 10% সংরক্ষণ পাওয়া যেতে পারে। শুধুমাত্র জেনারেল কাস্ট যারা অন্য কোন সংরক্ষণের অন্তর্ভুক্ত …
- ধাতুবিদ্যা দশম শ্রেণী – প্রশ্ন উত্তর | WBBSE Class 10th Physical Science Suggestion ভৌত বিজ্ঞান দশম শ্রেণীদশম শ্রেণী ভৌত বিজ্ঞান সাজেশন – WBBSE Class 10th Physical Science Suggestion – ধাতুবিদ্যা দশম শ্রেণী Chapter 8.5 – প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হল । এই WBBSE Class 10th (X) Madhyamik Physical Science Suggestion – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভৌত বিজ্ঞান সাজেশন – ধাতুবিদ্যা দশম শ্রেণী – প্রশ্ন উত্তর গুলি আগামী 2026 সালের পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ভৌত বিজ্ঞান …
- তড়িৎ প্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া – প্রশ্ন উত্তর | WBBSE Class 10th Physical Science Suggestion ভৌত বিজ্ঞান দশম শ্রেণীদশম শ্রেণী ভৌত বিজ্ঞান সাজেশন – WBBSE Class 10th Physical Science Suggestion – তড়িৎ প্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া Chapter 8.3 – প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হল । এই WBBSE Class 10th (X) Madhyamik Physical Science Suggestion – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভৌত বিজ্ঞান সাজেশন – তড়িৎ প্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া – প্রশ্ন উত্তর গুলি আগামী সালের পশ্চিমবঙ্গ …
- মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবনের প্রবাহমানতা (দ্বিতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Life Science Question and Answerমাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর : জীবনের প্রবাহমানতা (দ্বিতীয় অধ্যায়) Madhyamik Life Science Question and Answer : মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবনের প্রবাহমানতা (দ্বিতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Life Science Question and Answer, দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় এর প্রশ্ন উত্তর pdf নিচে দেওয়া হলো MCQ প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – …