ভারতের জাতীয় পতাকা নিয়ে এখানে কিছু গুরুত্তপূর্ণ বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। ভারতের জাতীয় পতাকার ইতিহাস, তাৎপর্য ও নিয়মাবলী (History, Significance & Rules), ভারতের জাতীয় পতাকার নকশা, রঙ ও চক্রের অর্থ (Meaning of Design, Colours & Chakra) ,ভারতের জাতীয় পতাকার ইতিহাস: বিবর্তন ও তাৎপর্য (History of the Indian Flag: Evolution & Significance), ভারতের জাতীয় পতাকার নকশার পেছনের গল্প (The Story Behind the Indian Flag’s Design), অশোক চক্র কি? জাতীয় পতাকায় এর তাৎপর্য (What is the Ashoka Chakra? Its Significance on the Flag) নিয়ে আলোচনা

একটি জাতির স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রের পরিচায়ক জাতীয় পতাকা।পতাকা উত্তোলন একটি পবিত্র ও জাতীয় কর্তব্য। জাতীয় পতাকা শুধু মাত্র একটি বস্তু খন্ড নয় এটি পরম আদর এবং শ্রদ্ধার বস্তু। জাতীয় পতাকা রাষ্ট্রীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক।
প্রঃ জাতীয় পতাকা কাকে বলে?
উত্তর: কোনো দেশের ও জাতির ঐতিহ্য, মর্যাদা ও গৌরবমন্ডিত প্রতীককে জাতীয় পতাকা বলে।
প্রঃ ভারতের জাতীয় পতাকা র বৈশিষ্ট্য কি?
উত্তর : ভারতের জাতীয় পতাকার তিনটি রং। ওপরের দিকে গৈরিক, মাঝে সাদা এবং নীচের দিকে গাঢ় সবুজ। মাঝের সাদা অংশের উপর নীল রঙের অশোক চক্র। নিয়মানুযায়ী পতাকার দৈর্ঘ্য ৩ মিটার এবং প্রস্থ ২ মিটার। এই পতাকার প্রতিটি রং-ই এক একটা আদর্শের প্রতীক।
যেমন- গৈরিক রং– শৌর্য, সেবা ও ত্যাগের প্রতীক।
সবুজ রং-কর্মশক্তি, নির্ভীকতা ও জীবনধর্মের প্রতীক।
সাদা রং-শান্তি ও পবিত্রতার প্রতীক। অশোক চক্র-উন্নতি ও প্রগতির প্রতীক।
প্রঃ ভারতের জাতীয় পতাকা কবে এবং কোথায় প্রথম উত্তোলিত হয়েছিল? সেই পতাকার রূপরেখা কেমন ছিল? কি করে বর্তমান রূপ পেল?
উত্তর : কলকাতার পার্শীবাগানে ১৯০৬ সালের ৭ই আগষ্ট প্রথম ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়েছিল। সেই সময় ঐ জাতীয় পতাকা ছিল লাল, হলুদ ও সবুজ রঙের তিনটি সমান অনুভূমিক ক্ষেত্র। উপরের লাল অংশে পরপর আটটি সাদা পদ্ম আঁকা ছিল। হলুদ অংশে দেবনাগরী অক্ষরে লেখা ছিল বন্দেমাতরম। সবুজ অংশের বাম কোণে ছিল সাদা রঙের সূর্য এবং দক্ষিণ কোণে অর্ধচন্দ্র একটি তারকা।
১৯৩১ সালে এই ভারতের জাতীয় পতাকা আবার পরিবর্তন করা হয়। বর্তমান জাতীয় পতাকার মতই তাতে গৈরিক, সবুজ এব সাদা রং ছিল। আর মাঝের অংশে চরকা। আর ওটাই ছিল কংগ্রেসের জাতীয় পতাকা। স্বাধীনতা লাভের কয়েকদিন আগে ঐ পতাকার মধ্যে চরকার পরিবর্তে সম্রাট অশোকের ধর্মচক্র বসানো হয়।
জাতীয় পতাকার তাৎপর্য ও ব্যাখ্যা
বর্তমান ভারতের জাতীয় পতাকা ত্রিবর্ণ রঞ্জিত। পতাকার উপরে রয়েছে গেরুয়া রং, মধ্যে সাদা এবং নিচে সবুজ রং। অশোক চক্রের রং গারো নীল। গেরুয়া রং ত্যাগ ও বৈরাগ্যের প্রতীক। সাদা রং শান্তি ও সত্যের প্রতীক। সবুজ রং বিশ্বাস, বীরত্ব, জীবনীশক্তি ও শস্য শ্যামলা প্রকৃতির প্রতীক। অশোক চক্রটি অহিংসা, মৈত্রী এবং প্রগতির প্রতীক
প্রঃ কোন্ সময় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়?
উত্তর: রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে, বিশেষ ব্যক্তির মৃত্যুতে ভারতের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
প্রঃ আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রতীক কি?
উত্তর: অশোকচক্রসহ সিংহ মূর্তি।
প্রঃ জাতীয় পতাকা ও রাষ্ট্রীয় প্রতীক ব্যবহারের প্রকৃতি কি রূপ? জাতীয় পতাকা ও রাষ্ট্রীয় প্রতীক ব্যবহারের পদ্ধতি কিরূপ?
উত্তর:
১। যেকোনো রাষ্ট্রীয় উৎসবের দিনে এই পতাকা সকলেই তার নিজ নিজ গৃহে উত্তোলিত করতে পারে। কিন্তু সূর্যাস্তের পর তা নামাতে হবে।
২। জাতীয় পতাকার মর্যাদা সবার ওপরে। তাই তার ওপরে বা ডানদিকে কোনো পতাকা রাখা যায় না।
৩। সরকারী অফিস ও আদালতে এই পতাকা সবসময় উড্ডীন থাকে।
৪। রাষ্ট্রীয় শোক দিবসে সরকারী ও বেসরকারী দপ্তরগুলিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে রাখা হয়।
৫। বিশেষ কোনো উৎসব উপলক্ষে যদি কোনো মিছিল বের হয় তাহলে সেই মিছিলের পুরভাগে জাতীয় পতাকা রেখে পরে অন্যান্য পতাকা রাখতে হবে।
৬। রাষ্ট্রীয় প্রতীক বা জাতীয় বা পতাকা ব্যবসা বা কোনো লঘু ব্যাপারে ব্যবহার করা দন্ডনীয়।
৭। জাতীয় পতাকা কখনও কোনো বস্তু বা ব্যক্তির সামনে নত করা যায় না। সেটা রাষ্ট্রের প্রতি অসম্মান সা প্রদর্শনের সামিল। জাতীয় পতাকার মান প্রাণ দিয়েও রক্ষা করা উচিত।
সংক্ষেপে জাতীয় পতাকার ইতিহাস
ইংরেজ আমলে আমাদের জাতীয় পতাকা ছিল না। ১৯০৫ সালে লর্ড কার্জনের কুখ্যাত বঙ্গভঙ্গ আইনের প্রতিবাদে দেশবাসী সোচ্চার হয় এবং জাতীয় পতাকার আদিরূপ কল্পিত হয়। ১৯০৬ সালের ৭ই আগস্ট কলকাতার পারসি বাগানের পার্কে প্রথম ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এর রঙ ছিল লাল হলুদ ও সবুজ
ভারতের জাতীয় পতাকায় গেরুয়া, সবুজ ও সাদা রঙের তাৎপর্য
১৯০৭ সালে প্যারিসে প্রবাসী ভারতীয়রা জাতীয় পতাকার পরি কল্পনা করেন। মাদাম কামা পরিকল্পিত ওই পতাকার রং ছিল গেরুয়া সাদা এবং সবুজ। ১৯২১ সালে গান্ধীজী সাদা সবুজ ও লাল রঙের একটি পতাকা প্রস্তুত করেন। ১৯৩১ সালে জাতীয় কংগ্রেস উপড়ে গৈরিক মধ্যে সাদা এবং নিচে সবুজ আর মাঝখানে চরকাযুক্ত জাতীয় পতাকা রচনা করেন। ১৯৪৭ সালের ২১ শে জুলাই গণপরিষদ এই তেরঙ্গা পতাকাকেই গ্রহণ করে তবে চরকার বদলে অশোক চক্র গৃহীত হয়
জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। জাতীয় পতাকা স্পর্শ করে জাতীয় সংহতির শপথ নেবার দিন এসেছে। আমাদের একটি আকাঙ্ক্ষা..
‘তোমার পতাকা যারে দাও, তারে বহিবারে দাও শকতি।‘
আরো পড়ুন :
প্রফুল্ল চাকী: এক অকাল মৃত্যুবরণকারী দেশপ্রেমিক
আরো পড়ুন :
আলবার্ট আইনস্টাইন এর জীবন থেকে ১০টি অজানা তথ্য
আরো পড়ুন :
চারুচন্দ্র দত্ত: ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিস্মরণীয় যোদ্ধা
আরো পড়ুন :
বাংলার রাজনীতিতে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস | দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস জীবনী
- 5.1 ভারত: অবস্থান ও প্রশাসনিক বিভাগ | Class 10 Geography Short Question and Answer 20255.1 ভারত: অবস্থান ও প্রশাসনিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal Class 10th Madhyamik Geography Examination – পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট তোমরা যারা মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য 5.1 ভারত: অবস্থান ও প্রশাসনিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) MCQ প্রশ্ন ও …
- চক্রপাণি দত্ত: কিংবদন্তী চিকিৎসক ও পণ্ডিতচক্রপাণি দত্ত ছিলেন বিখ্যাত একজন আদর্শ চিকিৎসক এবং শারীরতত্ত্ববিদ। বহু দূর থেকে রোগীরা তাঁর কাছে চিকিৎসার জন্য আসতেন। তিনি রোগীদের চিকিৎসা করতেন আনন্দ সহকারে এবং অবসর সময়ে বই লিখতেন। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে ‘চিকিৎসা সংগ্রহ‘, ‘দ্রব্য গুণ‘ এবং ‘সর্বসার সংগ্রহ‘ উল্লেখযোগ্য। ‘চক্রদত্ত‘ নামক গ্রন্থে তিনি চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় লিপিবদ্ধ করেছেন। টীকাকার ও উপাধি চক্রপাণি দত্ত …
- পশ্চিমবঙ্গ সরকারের EWS সার্টিফিকেট পাওয়ার পদ্ধতি | EWS Certificate West Bengal Criteria | EWS সার্টিফিকেট কি এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?EWS সম্পূর্ণ কথাটি হল ইকনোমিক্যালি উই কার সেকশন (Economically Weaker Section) বা সমাজের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণি। EWS সার্টিফিকেটের মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া অংশকে নির্দিষ্ট কিছু সরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়া।এই সার্টিফিকেট এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি চাকরিতে 10% সংরক্ষণ পাওয়া যেতে পারে। শুধুমাত্র জেনারেল কাস্ট যারা অন্য কোন সংরক্ষণের অন্তর্ভুক্ত …
- ধাতুবিদ্যা দশম শ্রেণী – প্রশ্ন উত্তর | WBBSE Class 10th Physical Science Suggestion ভৌত বিজ্ঞান দশম শ্রেণীদশম শ্রেণী ভৌত বিজ্ঞান সাজেশন – WBBSE Class 10th Physical Science Suggestion – ধাতুবিদ্যা দশম শ্রেণী Chapter 8.5 – প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হল । এই WBBSE Class 10th (X) Madhyamik Physical Science Suggestion – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভৌত বিজ্ঞান সাজেশন – ধাতুবিদ্যা দশম শ্রেণী – প্রশ্ন উত্তর গুলি আগামী 2026 সালের পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ভৌত বিজ্ঞান …
- তড়িৎ প্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া – প্রশ্ন উত্তর | WBBSE Class 10th Physical Science Suggestion ভৌত বিজ্ঞান দশম শ্রেণীদশম শ্রেণী ভৌত বিজ্ঞান সাজেশন – WBBSE Class 10th Physical Science Suggestion – তড়িৎ প্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া Chapter 8.3 – প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হল । এই WBBSE Class 10th (X) Madhyamik Physical Science Suggestion – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভৌত বিজ্ঞান সাজেশন – তড়িৎ প্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া – প্রশ্ন উত্তর গুলি আগামী সালের পশ্চিমবঙ্গ …
- মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবনের প্রবাহমানতা (দ্বিতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Life Science Question and Answerমাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর : জীবনের প্রবাহমানতা (দ্বিতীয় অধ্যায়) Madhyamik Life Science Question and Answer : মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবনের প্রবাহমানতা (দ্বিতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Life Science Question and Answer, দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় এর প্রশ্ন উত্তর pdf নিচে দেওয়া হলো MCQ প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – …